গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৬

সতীশ বিশ্বাস

 প্রতিবাদ
                                         

আসুন,আসুন। বাড়ি চিনতে কোন অসুবিধা হয় নি তো?’--ছেলের বাবার সৌজন্য। মেয়ের বাবা সার্থক সরকার বললেন,‘না,না। টোটোওলাই—’
-ও টোটো নিয়ে এসেছেন?
-হ্যাঁ,বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
মেয়ের মা,বাবা আর কাকা সোফায় বসলেন। ছেলে এসে নমস্কার করে তাদের পাশে বসল। ৩ প্লেটভর্তি মিষ্টি এল। ছেলের বাবা একটু হেসে বললেন,‘সামান্য...। খেয়ে নিন।সরকারবাবু সে কথায় গা না করে, ছেলের দিকে তাকিয়ে বললেন,‘তা বাপু, তোমাকে প্রথমেই একটা কথা জিজ্ঞেস করি। বলতো,তোমার সামনে যদি কেউ কোন অন্যায় করে, তুমি তাহলে কী করবে?’ছেলেটি উজ্জীবিত হয়ে বুক টান করে বলল,‘আমি তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রতিবাদ করব।সরকারবাবু ২ সেকেন্ড ছেলের দিকে তাকিয়ে থেকে উঠে পড়লেন। তারপর, হাতজোড় করে  ছেলের বাবাকে বললেন,‘দুঃখিত। আপনার এই ছেলের হাতে আমি আমার মেয়েকে তুলে দিতে পারব না। চলি।
ছেলের বাবা হা! সেই হা বন্ধ হবার আগেই টোটো চলে গেল।
                                                
 কাক

বাড়ির তারে মাঝে মাঝেই ৪/৫টা কাক এসে বসে। জনালা দিয়ে সুনীল তাদের দেখে। কাকগুলো ড্রেনের মধ্যে,আস্তাকুঁড়ে,আবর্জনার গাদায় ঠোঁট দিয়ে নোংরা ঘেটে কীসব খায়। কাকেরা চলে গেলে,সুনীল বাইরে বেরিয়ে দেখে প্রাচীরের ভিতরটা সাফ।
সেদিন সকালে কান্নার শব্দ শোনে গেল। সুনীল শুনলো--পাড়ায় নন্তুর দাদু মারা গেছেন। বয়স হয়েছিল ৯০। খুব কষ্ট পাচ্ছিলেন।
পরদিন কাকেরা আবার এল। প্রতিবারের মতো জঞ্জাল পরিষ্কার করে চলে গেল। দিন দুই পরে ও পাড়ার পঞ্চুর ঠাম্মা চলে গেলেন। প্যারালাইজ্‌ড হয়ে পড়ে ছিলেন। বিছানা থেকে উঠতেই পারতেন না।
উড়ে এসে বাড়ির তারে আবার এসে বসল কাক।