--এ গিরধারি, তেরা জরু কিধর গইলো রে...?’ হাতে খইনি ডলতে ডলতে এগিয়ে আসে পিয়ারীলাল। পরনে নীল রঙের লুঙ্গি,কাঁধে একটা আধময়লা তোয়ালে আলগা করে ফেলা আছে। লুঙ্গিটা একটু উঁচু করে পরা। পায়ে কাটা টায়ারের চটি। একদিকের পা দিয়ে তখনও জল গড়িয়ে পড়ছে। গিরধারি তার দিকে একবার ত্যারছা চোখে চেয়ে দেখে নিল। --শালা...,নির্ঘাত ঘুম থেকে উঠে লোটা নিয়ে দৌড়েছিল। দেখো ইস্কো...ই শালাকে দেখলে ঘিন লাগে, থুঃ...’ ।
পিয়ারীলাল গিরিধারীর কাছে এসে দাঁড়াল। ...আরে,এ গিরধারি তেরা জরু কিধর গইলো,ভাগলো কেয়া...’বলেই একটা চোখ কুঁচকে মুখে একটু রহস্যের হাসি মাখিয়ে মুখটা গিরধারির কানের কাছে এনে বললে—সাথ মে
কোই থা ,কৌন রে...’ ?
গিরিধারী বউয়ের উপর বেজায় চটে আছে, কিন্তু পিয়ারীলালের এই কথায় কোন উত্তর
দিল না, দিতে পারল না। কেমন যেন নিজেকেও ছোট করা হয় তাতে।
কিন্তু না বললে কি হবে, উ গিরধারি শালা এক নম্বরের গিধর
আছে, সব ছিঁড়েখুঁড়ে বার করবে।
রাগত মুখে পিয়ারীলালের দিকে তাকাল কিন্তু মুখে কিছু বলল না। পিয়ারীলাল খইনিটা ডলে নিয়ে এক চুটকি
গিরিধারীর দিকে এগিয়ে দেয়। গিরিধারীর ইছে ছিল না। কিন্তু খইনির অপমান, তাও আবার সাত সকালে...কভি নেহি! অনিচ্ছাসত্ত্বেও হাত বাড়াল সে।
পিয়ারীলাল গিরধারীর হাতে চুটকিটা ঝাড়তে
ঝাড়তে আবার বলে—--
মন খারাব আছে! দুখী মত বনো। মান লো কি উ জনানা তুমার নহী আছে,
কিসি অঊর কি... ‘ কথাটা শেষ করার আগেই
চটাস্ করে একটা শব্দ পিয়ারীলালের গালে। পিয়ারীর হাতের খইনি কিছুটা হাওয়ায়,
কিছুটা উড়ে মাটিতে পড়ে গেল
। খুক্খুক্ করে কাশতে কাশতে টাল সামলে নিল পিয়ারীলাল। অবাক হয়ে তাকাল গিরধারীর
দিকে। চোট তো গহেরা মালুম হচ্ছে। রাগে দুঃখে গিরিধারীর মুখ তখন বেগুনী।
পিয়ারীলালকে চড় মারলেও পিয়ারীলাল এগিয়ে এসে গিরিধারীর কাঁধে হাত রেখে কিছু বলতে যাবে, একেবারে ভেঙ্গে পড়ল গিরিধারী...’উ মোটর সাইকেল বাবু, শালা হারামি...বুধনীকো লেকে চলা গয়া ঔর বুধনী ভি...... ‘কাঁদতে লাগল বাচ্চা ছেলের মত। বুধনীকে খুব ভাল করে চেনে পিয়ারীলাল। মাঝে সাঝে সেও এটা সেটা কিনে দিয়েছে। লুকিয়ে একদিন মেলায় নিয়ে গিয়েছিল। গিরধারী কি মালুম আছে! মনে মনে রাগ হল বুধনীর উপর। আরে, উ মোটর সাইকেল বাবু দো দিন কা মেহমান। ফির খাবে-দাবে অউর ঘর সে নিকাল দেবে। ফির এক কো উঠাকে লিয়ে যাবে। বুদ্ধু বুধনী! কাহে কো মোটর সাইকিল বাবু...তু ইঁহা রহনে সে গিরধারি ভি, হম ভি দোনো এক সাথ... বাকিটা ভাবার সময় পেল না। তখনও গিরধারী বাচ্চাদের মত হাপুস নয়নে কাঁদছে আর বলছে...ইস্সে আচ্ছা তো তেরা সাথ রহনা পিয়ারী...কম সে কম দেখ তো লেতা...অব হোম ক্যা করবে ...তু লে আরে মেরে বুধনী কো...তু লে কে আ রে...।
পিয়ারীলাল স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়িয়ে রইল। গিরধারী তখনও কেঁদে চলেছে....