গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

তাপসকিরণ রায়

মহুয়া

মহুয়া আমার জীবন ছুঁয়ে ছিল।
জাতপাত, রহন-সহনে সে যে ছিল অন্য ধারার নারী !
বস্তারের মনঝোলী আদিবাসী গ্রামে কিছুদিন ছিলাম। রিপোর্টার হয়ে নকশাল গতিবিধির রিপোর্ট দিতে হত। 
অরণ্যঘণ জায়গা। লোকালয় থেকে দূরান্তে সাল-মহুলের অরণ্যঘেরা এক আদিবাসী গ্রামের ঝোপড়ি ঘরে থাকতাম। কাজের ফাঁকে ফাঁকে মহুয়াকে বারবার দেখেছি। ও নিশ্চয় আমাকেও দেখেছে। কুচকুচে কালোর মাঝে তেলাল শরীর, আবেদনে ভরে থাকা চকমকি চেহারা তার। 
রোজ মহুয়ার তাড়ি খেতে যেতাম। আদিবাসীদের নিজস্ব চোলাই, গলায় পড়লেই ছলাং দিয়ে উঠত শরীর ! বউ, বেটি, মরদ সবাই এসে ভিড় করত ভাটিতে। মেয়েরা আমায় দেখে হাসত। সেদিন মহুয়া আমার সামনে এসে বলে ছিল, আজ তুর ঘর যাব, বাবু ! ও নেশায় মত্ত ছিল, উচ্ছল হাসছিল। 
--চল, বলে নেশামত্ত আমি ওকে আমার আস্তানায় নিয়ে আসলাম।
মহুয়া এসেই আমার ঘরের খাটিয়ায় ধপ করে শুয়ে পড়ল। 
--এই কি করছিস তুই! 
হিহি, হাহা করে খানিক হেসে আমার দিকে তাকিয়ে ও বলল, তু খুব সৌন্দর বাবু ! তুকে আমি ভালবাসি রে বাবু ! হেঁচকা টান মেরে ও আমায় ওর শরীরের ওপর টেনে নিলো।
আমি তখন নেশায় বিভোর, বললাম, এই, কি হচ্ছে মহু ?
মহুয়া আমায় আদর-চুম্বনে ভরিয়ে দিতে দিতে বলে উঠেছিল, তু চলে যাবি জানি বাবু--আমি তুর মত সৌন্দর একটা বেটা মুর পেটে ধরতে চাই!