গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

শুক্রবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৭

নন্দিনী পাল

  হয়তো আবার দেখা হবে

 

ইন্টারন্যাশানাল ডিপারচারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সুপ্রতীম।  সেদিকে তাকিয়ে থাকতে  থাকতে  শ্রীতমার মনে পড়ে যাচ্ছে অনেক কিছু ।  সেই কলেজ দিন গুলোর কথা, তারপর পাঁচ বছর প্রেম । আমেরিকা যাবার আগে সুপ্রতীম যখন তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিল,একটা দোটানা তার মনটাকে   এমনভাবে  নাড়া দিল,সে  কিছুতেই  হ্যাঁ করতে পারল না । তা না হলে তারা দুজনে একসাথে হাতধরে  এগিয়ে  যেত ডিপারচার  গেটের  দিকে।

ভালবাসার জন্য লোকে কত কিছুই  ত্যাগ করে  অথচ সে কোনও কারণে  ছেড়ে যেতে পারবে  না  ওদেরকে । সুপ্রতীম অবশ্য জোর করেনি ।  শ্রীতমা তার কাছ থেকে কিছুটা  সময় চেয়ে  নিয়েছে  সেও  কোনওভাবে  জোর করেনি  সুপ্রতীমকে  এদেশে  থেকে  যাবার জ ন্য। 

সুপ্রতীম  পৌঁছে  গেছে ডিপারচার গেটে । এতক্ষণ একবারের জন্য পিছন ফিরে তাকায়নি । গেটে পৌঁছে হাতব্যাগটা সিকিউরিটি চেকে দেবার আগে একবার হাতটা আলগোছে তুলল । চোখ দুটোতে একরাশ অভিমান এতদূর থেকেও টের পেল শ্রীতমা । এরপর সে  নিজেকে কোনওরকমে  সংযত করল । একটা কান্নার দলা  তার গলার কাছে আটকে আছে। সেটাকে কোনমতে গিলে সে হনহন করে হাঁটতে লাগল  ট্যাক্সিসট্যান্ডের  দিকে ।  তাকে এক্ষুনি  পৌঁছতে হবে বাড়িতে সেখানে  অপেক্ষা করছে তার ক্যান্সার আক্রান্ত বাবা আর অথর্ব মা


গাড়ীতে বসে সে তাকাল আকাশের দিকে ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়ছে । ধূসর বিষন্ন আকাশে বৃষ্টির ওড়না ছিঁড়ে উড়ে যাচ্ছে প্লেনটা সেদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে শ্রীতমা মনে মনে বলল,সুপ্রতীম অপেক্ষা কোরো নয়তো বন্ধু হয়েই থেকে যেও সারাজীবন।