গল্পগুচ্ছতে প্রকাশিত লেখার বিষয়ভাবনা বা বক্তব্যের দায় লেখকের । সম্পাদক কোনভাবেই দায়ী থাকবেন না ।

বুধবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৮

সুধাংশু চক্রবর্ত্তী

 গোলাপের কুঁড়ি

ছেলেটা খুব হাসছে হো হো করে । সেই হাসি যেন থামতেই চায় না । মেয়েটা ভয়ে গুটিসুটি মেরে বসে আছে ঘরের এক কোণে । বাইরে তখন সন্ধ্যে নেমেছে । ছেলেটা হাসি থামিয়ে প্যান্টের পকেটে হাত ঢোকাতেই মেয়েটি ভয়ে কেঁপে উঠে কান্নাজড়ানো গলায় বলে ওঠে – “আমাকে ছেড়ে দাও তুমি ।” 
 “ছেড়ে দাও বললেই কি ছাড়া পাবি ভেবেছিস ? মোটেও না ? এবার দ্যাখ কী করি তোকে ।
 “কী করেছি আমি ?”
 “কেন ? মনে নেই কী কী করেছিস আমার সঙ্গে ? বাবা-মাকে দিয়ে মার পর্যন্ত খাইয়েছিস আমাকে । এখন তার প্রতিশোধ না নিয়ে ছাড়বো কেন ?”
 “সত্যি বলছি আর কক্ষনো করবো না । এই তিন সত্যি করলাম । কক্ষনো না , কক্ষনো না, কক্ষনো না । এবার আমাকে ছেড়ে দাও তুমি ।
 “নাহ্‌ , তোকে ছাড়া যাবে না । আজ একটা বিহিত করে তবেই ছাড়বো । এবার দ্যাখ কী করি তোকে ।

ছেলেটা কথাগুলো বলতে বলতে পকেট থেকে বের করে আনে লুকোনো বস্তুটি । দেখেই মেয়েটি দ্রুত উঠে এসে ছেলেটির গলা জড়িয়ে ধরে খিলখিল করে হেসে ওঠে । হাসি থামিয়ে বলে – “ছেড়ো না আমাকে । পারলে আজীবন ধরে রেখো এভাবেই ।


সহসা খোলা জানালা বেয়ে এক ঝাঁক জোনাকিপোকা এসে ঢুকে পড়লো এই ঘরে । চোখের নিমেষে জোনাকির আলোয় অদ্ভুৎ একটা মায়াবী পরিবেশ সৃষ্টি হলো ঘরের ভিতর । ছেলেটি বিভোর হয়ে থাকিয়ে আছে মেয়েটির হাস্যজ্জ্বল মুখটির দিকে । হাতে ধরে থাকা আধফোটা গোলাপের কুঁড়িখানা তখনো দিয়ে উঠতে পারেনি মেয়েটিকে ।